I collect material related to this movement from wherever possible and post them here. I was born much after this movement.
সোমবার, ২৭ জুন, ২০২২
Malay Roychoudhury drawn by Krishnadhan Acharya
বুধবার, ২২ জুন, ২০২২
99th Hungryalist Bulletin Edited by Malay Roychoudhury
এর আগে শতাধিক বুলেটিন প্রকাশিত হয়েছিল ।
৯৯ নম্বরটা জাস্ট ফর ফান ।
ফালগুনী রায়-এর একমাত্র ফোটো আছে এই কোলাঝে,
ওপরে একেবারে ডানদিকে ।
দ্রষ্টব্য : মলয় রায়চৌধুরী যোনি থেকে বেরোচ্ছে ।
শনিবার, ১৮ জুন, ২০২২
ড্যানিয়েলা ক্যাপেলো : হাংরি জেনারেশন আন্দোলন
শুভঙ্কর দাশের অনুবাদ করা ড্যানিয়েলা কাপেলো’র প্রবন্ধ :
“আমি যখন একটা অনুবাদের কাজ নিয়ে প্রথম কলকাতায় আসি ( আমার প্রথম ভারতে আসার অভিজ্ঞতা ) আমি এই শহরটা আর তার লোকজনদের প্রেমে পড়ে যাই, বাংলা শিখতে শুরু করি, নিজে নিজে চেষ্টা করে, কয়েকটা কোর্স আর আমার বাঙালি বন্ধুবান্ধবদের সাথে কথা বলতে বলতে । ওটাই ছিল আমার প্রাচ্যের সাথে পথ চলার সেই ম্যাজিকের শুরু । আর সে পথ মসৃণ ছিল না মোটেই । পরে আসবে হাংরিরা আর আমার মুখে মারবে এক ঘুষি, যাতে আমি টের পাই কলকাতার নিচুতলার নোংরা জীবনের স্বাদ । এটি ছিল ‘অদ্ভুত অন্য’-র দিকে তাকানোর একটি পুরোনো উপায়ের সমাপ্তি : একটি খাঁটি, স্হানীয় ভারতবর্ষের স্বপ্ন শেষ হয়ে গিয়েছিল, যখন আমি সীমালঙ্ঘন, ভহুভাষিকতা, অস্পষ্টতা এবং দ্বন্দ্বের জগতে আমার দৃষ্টি ফিরিয়েছিলাম, যখন তা ধরা পড়ছিল ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের পতনের পর ভারতের সাহিত্য-সংস্কৃতিতে ।
“হাংরি জেনারেশন আন্দোলন সম্পর্কে প্রথমে যা আমাকে নাড়িয়ে দিয়েছিল তা হলো দুটি ব্যাপার । প্রথমটি ছিল ১৯৬৪ সালে অশ্লীলতার জন্য তাদের শাস্তির জন্য কৌতূহল । এই কবিরা সেই মহাকাব্যের মধ্যবিত্ত পাঠকের কাছে কতটা উত্তেজক এবং মর্মান্তিক ছিল ? আমি কৌতূহলী ছিলাম যে তাদের কবিতাকে কতটা অশ্লীল বলে সংজ্ঞায়িত করা যায় এবং সেই অশ্লীলতা ঠিক কী ?
“দ্বিতীয়টি ছিল এই আন্দোলন সম্পর্কে ‘নীরবতা’, যা অ্যাকাডেমিয়ায়, সাহিত্যের ইতিহাসে এবং জনসাধারণের ভেতর স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল । মত প্রকাশের স্বাধীনতা, অশ্লীলতা এবং সেনসরশিপের বিষয়গুলো ২০১০ সালের পরে এবং বিশেষত বিজেপির উথ্থানের সাথে এবং জনসাধারণের ক্ষেত্রে হিন্দুত্বের মতা দর্শের প্রত্যাবর্তনের সাথে বেশ জোরালোভাবে উঠে আসছিল । আমার পছন্দের অনেক লোক যেমন ইতিবাচকভাবে বিস্মিত এবং এমনকী বিমোহিতও হয়েছিলেন, তবু তাঁদের কারোর কারোর প্রতিক্রিয়া অবশ্যই বিভ্রান্তিকর এবং কিছু পরিমাণে, বাঙালি মধ্যবিত্তের সীমালঙ্ঘনকারী এই লেখকদের কাছে আমার ‘রিটার্নিং ভয়েসেস’ বেছে নেওয়ার প্রতি শত্রুতারও কারণ ছিল । কেন একজন ইতালীয় তরুণী, রবি ঠাকুর এবং শরৎচন্দ্র পড়ার পরিবর্তে বা বাংলা খ্যাননের অন্য কোনও ( কম সমস্যাযুক্ত ) আইকন পড়ার পরিবর্তে অ-লিরিকাল এই বন্য অশ্লীল লেখকদের সম্পর্কে জানতে চাইবেন, যারা তাদের কবিতায় যৌনতার কথা বলেছে ? এখন আমি সম্পূর্ণরূপে তাদের বক্তব্য বুঝতে পারছি। আমি পরে বাংলা ভাষায় এই সাহিত্যিক পপতি-সদংস্কৃতির ( কাউন্টার কালচার ) অনেকগুলো আকর্ষণীয় – তবুও বিপরীত –দিকগুলো আবিষ্কার করেছি এবং কেন সেগুলো মূল ধারার সাহিত্য-সংস্কৃতির জন্য সমস্যাযুক্ত এবং বিতর্কিত হিসাবে বিবেচিত হয়েছিল তাও । তাদের অপবিত্রতা, বিদ্রুপ এবং বিদ্রুপমূলক উপহাসের কবিতাগুলো এই পুরুষদের আচরণের অন্যান্য শেডগুলোর সাথে সহাবস্হান করেছিল : যৌনতাহীন, অতি-পৌরুষ এবং নারীবিদ্বেষ ।
“হাংরিদের সাথে আমার সাক্ষাতের অনেক আগে, আমার গবেষণাটি ছিল স্হানীয় ভাষায় সাহিত্য অন্বেষণ এবং বিশ্বব্যাপী সাহিত্য পাঠের অনুবাদ এবং তা গ্রহণ সম্পর্কিত প্রশ্নগুলো অনুসন্ধান করা । আমার স্নাতকোত্তর শেষ হবার পর, আমি দক্ষিণ এশিয়ায় ‘ছোটো আরকাইভ’ এবং ‘সস্তা’ সাহিত্য সামগ্রী নিয়ে কাজ করার কথা ভাবছিলাম । সেইসব ‘ক্ষণস্হায়ী’ উপাদান এবং ‘খণ্ডিত’ জ্ঞানের সেই ভাণ্ডারগুলো তালিকাবিহীন অবস্হায় বিশ্বের বিভিন্ন লাইব্রেরিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে । আমি অবাক হয়েছিলাম এবং অবশ্যই দিশেহারা যখন আমি হাংরি আন্দোলনকারীদের চিঠি, ইশতেহার, লিফলেট এবং ম্যাগাজিনগুলোর একটা বিশাল অংশ সেই লাইব্রেরিগুলোতে খুঁজে পেলাম । পশ্চিমবঙ্গ থেকে মার্কিন যধক্তরাষ্ট্রে ছোট আরকাইভের মাধ্যমে যা ছড়িয়ে পড়েছে ।
“বিশৃঙ্খল এবং খণ্ডিত ছিল সেই ১৯৬০-এর দশকের ‘হাংরি আন্দোলনের’ জীবন্ত কিংবদন্তিদের সাথে আমার ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকারগুলোও । আমার সাক্ষাৎকারগুলোর মতোই, যেগুলোর জন্য আমি একটি সাধারণ স্মার্টফোনে অনভিজ্ঞ রেকর্ডিঙগুলোর সাথে ট্র্যাক রাখার চেষ্টা করেছি — পটভূমিতে কলকাতার রাস্তার আওয়াজসহ । আমি তো চাই আরও ভালো সরঞ্জাম, একটি সুসঙ্গঠিত পরিকল্পনা এবং স্মার্ট প্রশ্ন নিয়ে ফিরে আসতে । কিন্তু আমার উপকরণগুলো যতোই অগোছালো এবং অসংগঠিত হোক না কেন, আমার হোস্টরা সবসময় সাহায্য করেছেন এবং আমার জিজ্ঞাসার তৃষ্ণা মেটাতে সময় দিয়েছেন ।
“আমি বাঁশদ্রোণীতে সমীর এবং তাঁর স্ত্রী বেলা রায়চৌধুরীর সাথে মিষ্টি খাওয়া এবং আড্ডায় আমার দীর্ঘ রবিবারগুলো লালন করেছি । মুম্বাইতে মলয় এবং সলিলাদির সাথে দেখা, ফোটোশুট এবং গল্প করেছি । হাওড়ায় দেবী রায়, কলকাতায় প্রদীপ চৌধুরী, পার্ক স্ট্রিট কফিডেতে শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের মেয়ে তিতি রায়ের সঙ্গে দেখা করেছি । কবি এবং বুকাওস্কি অনুবাদক শুভঙ্কর দাশ এবং কসবার বাড়িতে তার বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করেছি । দিল্লিতে হাংরি আন্দোলনের চিত্রশিল্পী অনিল করঞ্জাইয়ের স্ত্রী জুলিয়েট রেনল্ড এবং আরও অনেকের সাথে দেখা করে তথ্য সংগ্রহ করেছি ।
“আমি সেই ভার্চুয়াল কাব্যিক ‘অন্য জগতের’ স্পেসে প্রতিদিন ফালগুনী রায়ের সঙ্গে দেখা করতাম, তার বিদ্রুপের পাশাপাশি তার যন্ত্রণার সাথেও পরিচিত হতাম । সময়ের সাথে সাথে এই বিভিন্ন সম্পর্কের লালন আমাকে এবং আমার গবেষণার জন্য অনেক কিছু দিয়েছে । তাদের এবং তাদের অনুগামীদের সাথে দেখা করার ফলে একজন লেখক এবং হাংরিয়ালিস্টের অন্তরজগতে থাকা ‘ব্যক্তিটি’ সম্পর্কে আরও সুনির্দিষ্ট ধারণা দিয়েছে আমায় এবং আমাকে ব্যাপারগুলোকে সঠিক পরিপ্রেক্ষিতে দেখতে সাহায্য করেছে ।
“সম্ভবত তখন আমি জানতাম না কেন আমি বাংলা কবিতার এই ‘এনফ্যান্ট টেরিবলদের’ , এই হিংস্র এবং শিকারী পুরুষত্বের লেখকদের, বিশেষ করে একজন অবাঙালি নারী হিসেবে, অন্বেষণ করতে এতো দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ ছিলাম । কিন্তু সঠিক দৃষ্টিভঙ্গীতে দেখার ফলে আমি বলতে পারি যে সাহিত্যসমাজের কিছু মানুষের বিভ্রান্তি এবং শত্রুতার বৈশিষ্ট্য আমাকে এই আভাঁগার্দ আন্দোলনের ব্যাপারে আরও কৌতূহলী করে তুলেছিল । এবং হাংরিদের লেখালিখি সেই লোকগুলোর মতে ছিল নোংরা, অনৈতিক, জঘন্য, বিকৃত, ঘৃণ্য— এবং তাই বাঙালি মধ্যবিত্ত এবং অতিবিদ্বান পাঠকরা হাংরি লেখকদের ব্যক্তি হিসাবেও বিপজ্জনক মনে করতেন। তাদের যৌন অস্পষ্টতা এবং ভাষাগত ‘মাঝামাঝি অবস্হান’-এর প্রেক্ষিতে হাংরিদের প্রান্তিকতা নিয়ে বাংলা সাহিত্যের মূলধারায় ছিল নিন্দনীয় ।
“আমার অবস্হান ছিল এরকম – ইউরোপের একটি দক্ষিণ শহরের বাসিন্দা তরুণী, উত্তর-ইউরোপীয় অ্যাকাডেমিক পাঠিকা-শ্রোতা বয়স্ক বাঙালি কবিদের সাথে কথা বলছেন —- তাদের সাথে, যারা একসময় বিদ্রোহী দুষ্টু ছেলে ছিল, যারা লড়াইটা করেছিল । দৃষ্টিভঙ্গীর এই তফাত আমাকে আরও সমৃদ্ধ এবং কৌতূহলী করেছিল ।
“শেষ পর্যন্ত, বছরের পর বছর খোঁজ এবং সংগ্রহ, পড়া, অনুবাদ এবং প্রায়ই বুঝতে না পারা, কয়েকমাস পর একই কবিতায় ফিরে এসে, আবার অনুবাদ এবং পুনঃব্যাখ্যা করে, আমি আমার অনুসন্ধানের ইতিবাচক বৈধতা বুঝতে পেরেছিলাম ; ‘বোধগম্যতা’ কোনও রৈখিক প্রসারণ নয় । উল্টোদিকে, ট্রিগারগুলোর মধ্যে একটা ছিল বুঝতে পারার অসম্ভাব্যতা, ‘অনুবাদের অগম্যতা’ শব্দস্হাপন, এবং অনুভূতি যা সর্বদা নৃতাত্বিক অভিজ্ঞতার কেন্দ্রে থাকে ।”
(গ্রাফিত্তি পত্রিকার মে ২০২২ সংখ্যায় প্রকাশিত )