রাজসাক্ষী লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
রাজসাক্ষী লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

রবিবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৮

Bengali Poetry : Dominic Byrne of BBC


In the early 1960s, Kolkata was in the grip of major food shortages, an insecure and incompetent government and disillusionment amongst the young intelligentsia with the post-colonial political establishment. It gave rise to the so-called 'Hungry Generation' , a band of irreverent and articulate angry young men (and woman) who cocked a snook at the establishment. Alan Ginsberg (1926 - 1997) was an active supporter.


Source

Quote:
The Hungry Generation (Bengali: হাংরি জেনারেশান) was a literary movement in the Bengali language launched by what is known today as the Hungryalist quartet, i.e. Shakti Chattopadhyay, Malay Roy Choudhury, Samir Roychoudhury and Debi Roy (alias Haradhon Dhara), during the 1960s in Kolkata, India. Due to their involvement in this avant garde cultural movement, the leaders lost their jobs and were jailed by the incumbent government. They challenged contemporary ideas about literature and contributed significantly to the evolution of the language and idiom used by contemporaneous artists to express their feelings in literature and painting.[1]

The approach of the Hungryalists was to confront and disturb the prospective readers' preconceived colonial canons. According to Pradip Choudhuri, a leading philosopher and poet of the generation, whose works have been extensively translated in French, their counter-discourse was the first voice of post-colonial freedom of pen and brush. Besides the famous four mentioned above, Utpal Kumar Basu, Binoy Majumdar, Sandipan Chattopadhyay, Basudeb Dasgupta, Falguni Roy, Subhash Ghosh, Tridib Mitra, Alo Mitra, Ramananda Chattopadhyay, Anil Karanjai, Saileswar Ghosh, Karunanidhan Mukhopadhyay, and Subo Acharya were among the other leading writers and artists of the movement.

An example, transcribed by me, below.

"So", by Samir Roychoudhury

O Sir, nobody uses the Jadhavpur Subway for a road crossing.
During the night, the aristocrat lunatics sleep there
A passenger queried, "Is the taxi-meter okay?"
I delivered a counter, "Is the country okay?"
The poem that tipped the balance against the movement was "Stark Electric Jesus", by Malay Roychoudhury. The authorities never got the meaning of the words The 'Hungryalists', (as they termed themselves,) were accused of obscenity and conspiracy against the state, and many lost their jobs and some were imprisoned for a while.

 The Hungry Generation
Quote:
Allen Ginsberg arrived in early 1960s Calcutta to discover a collective of angry young poets whose anti-establishment antics were uncannily reminiscent of his own past. This is the story of the so-called Hungry Generation.

Fifty years later, we follow in the footsteps of the Beat Generation to the literary centre of India and go in search of the Hungryalist poets. Who were they? Where did they fit with a rich Bengali literary tradition that includes the great Rabindranath Tagore? What eventually led to their arrests, imprisonment and disbandment?

The Hungry Generation were a special breed - born in the slums, but highly educated and primed for a revolution in both literature and society. Through their verse, they broke strict rules of Bengali poetry as well as social taboos. In their actions they rubbished 'bourgeois' Bengali polity - consciously acting without manners or etiquette, burping, farting and using bad language.

They also used clever stunts to attack local officials and politicians, and held readings in socially unacceptable venues such as brothels, opium dens and graveyards. Hungryalist poets, such as the Roychoudhary brothers, and Utpal Kumar Basu, stood for the outsiders of society.

Eventually the authorities had enough. Hungryalists were rounded up and arrested on charges of obscenity and conspiracy against the state. Ginsberg attempted to intervene, sending letters of support. US literary journals carried the story and printed Hungryalist poetry. The movement floundered.

But despite this, we discover that the Hungryalist anti-establishment spirit is very much still alive in modern-day Calcutta today.

Produced by Dom Byrne
A Blakeway production for BBC Radio 4.
According to Malay Roychoudhury, even fellow movement poets, Utpal Kumar Basu, Saileswar Ghosh, Subhash Ghosh and Shakti Chattopadhyay testified against him at his trial.


One of the presenters is Utpal Kumar Basu's son, Feroz Basu,



The other presenters are Ipshita Chanda and Deborah Baker, with Samir and Malay Roychoudhury's comments.


শনিবার, ৬ মে, ২০১৭

হাংরি আন্দোলন : সন্দীপন চট্টোপাধ্যায় কেন মুচলেকা দিয়ে পুলিশের সাক্ষী হয়েছিলেন । তাঁর নিজের কথায় ।

 সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়-এর স্বীকৃতি
সে-সময়ে আমাদের কেউই পাত্তা দিত না, যারা হাংরি আন্দোলন শুরু করে, সেই মলয় রায়চৌধুরী এবং সমীর রায়চৌধুরী আমাকে জানান যে আমার লেখা ওদের ভালো লেগেছে, ওরা যে-ধরণের লেখা ছাপতে চায়, তা নাকি আমার লেখায় ওরা দেখতে পেয়েছে, তাই আমার লেখা ওরা ছাপতে চায় । ওদের কাছে পাত্তা পেয়ে আমি খুবই আহ্লাদিত হয়েছিলুম ।
হাংরি আন্দোলনের ইস্তাহার আমি অনেক পরে দেখেছি । সে-সময়ে শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের একটা গল্প আমাকে ভীষণভাবে নাড়া দিয়েছিল । বলতে গেলে সেই গল্পটার জন্যই আমি হাংরি আন্দোলনের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলুম । গল্পটার নাম আমার ঠিক মনে নেই । গল্পটা ছিল অনেকটা এইরকম -- একটা ছেলে, তাত ভীষণ খিদে । একদিন ছাত্রীকে পড়াতে-পড়াতে ছাত্রীর আঁচলের খুঁট খেতে শুরু করে । এইভাবে সে একটু-একটু করে পুরো শাড়িটা খেয়ে ফ্যালে । তাত তার বেশ ভালোই লাগে । তখন সে তার ছাত্রিকেই খেতে শুরু করে । একটু টক টক লাগে কিন্তু শেষ পর্যন্ত পুরো ছাত্রীকেই সে খেয়ে ফ্যালে । এ ব্যাপারটায় সে বেশ মজা পেয়ে যায় । এরপর থেকে সে অনেক কিছুই খেতে শুরু করে । যেমন জানালা, চেয়ার, ছাপাখানা, নোটবুক ইত্যাদি । একদিন এক হোটেলের সান্ত্রিকেই সে খেয়ে ফ্যালে । এই ছেলেটিই একদিন গঙ্গার ধারে তার প্রেমিকাকে নিয়ে বসেছিল । হঠাৎ তার সেই খিদেটা চাগাড় দিয়ে ওঠে । তখন সেই ছেলেটি গঙ্গার পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা একটা জাহাজকে খেতে যায় । কিন্তু সেই ছেলেটি জাহাজটাকে খেতে পারে না । জাহাজটা ছেড়ে দ্যায় । তখন সেই ছেলেটি একটা চিরকুট গঙ্গায় ভাসিয়ে দেয় । সেটা ঠিক কার উদ্দেশে ভাসিয়েছিল তা জানা জায় না । ছেলেটির প্রেমিকার উদ্দেশ্যেও হতে পারে ।  পৃথিবীর উদ্দেশ্যেও হতে পারে । বা অন্য কিছুও হতে পারে । এখানেই গল্পটা শেষ । এই গল্পটা আমাকে সেসময়ে ভীষণভাবে নাড়া দিয়েছিল এবং আমার মনে হয়েছে ক্ষুৎকাতর আন্দোলনের এটিই মূল কথা ।
আমি হাংরি আন্দোলনের সঙ্গে ভীষণভাবেই জড়িত ছিলাম । হাংরি আন্দোলনের আদর্শ --- আমার ভালো লেগেছিল এবং তা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেছিলাম বলেই আমি ওদের সঙ্গে ছিলাম । এব্যাপারে আমার কোনো দ্বিমত নেই । কিন্তু পরের দিকে ওরা আমাকে না জানিয়ে আমার নামে পত্রিকা-টত্রিকা বার করে । যা আমাকে ক্ষুব্ধ করেছিল ।
তখন আমি কৃত্তিবাসের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম । কিন্তু এই হাংরি আন্দোলন যখন শুরু হয় তখন সুনীল আমেরিকায় । এই আন্দোলনকে সুনীলের অসাক্ষাতে একটা ক্যু বলতে পারা যায় ।
প্রতিষ্ঠানের লোভ আমার কোনো দিনই ছিল না । বাংলাদেশে যদি কেউ প্রতিষ্ঠানবিরোধিতার ভূমিকা পালন করে থাকে তবে তা আমি । আমার "বিজনের রক্তমাংস" গল্পটি বেরোনোর পর থেকে আমার সে-ভূমিকা অব্যাহত।
আমি মনে করো ওরকমভাবে দল পাকিয়ে সাহিত্য হয় না । একজন লেখক নিজেই অতীত, নিজেই ভবিষ্যত, নিজের সমাজ, নিজেই সভ্যতা, এবং নিজেই সবকিছু । সাহিত্য সৃষ্টিতে দলের কোনো ভূমিকা থাকতে পারে না ।
আমি মুচলেকা দিয়েছিলাম তার দুটো কারণ । এক, আমি পুলিশকে ভীষণ ভয় পাই আর দুই, আমার বউ আমাকে জেলে যেতে বারণ করেছিল । বউ বলল যে, একেই তো তোমার মতো মদ্যপকে বিয়ে করার জন্য আমার আত্মীয় পরিজনরা সব আমার সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়েছে । তার ওপর তুমি যদি জেলে যাও, তাহলে সোনায় সোহাগা হবে । সেজন্যই আমি ওদের সঙ্গে সব সম্পর্ক ত্যাগ করি । 
                                       
                      Sandipan Chattopadhyay as Police Witness
                           in Hungry Generation Trial in 1964

মঙ্গলবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৬

সুভাষ ঘোষ-এর কুখ্যাত মুচলেকা -- হাংরি জেনারেশন আন্দোলন

আমার নাম সুভাষ ঘোষ । গত এক বৎসর যাবত আমি কলেজ স্ট্রিট কফিহাউসে যাতায়াত করছি । সেখানে আমার সঙ্গে একদিন হাংরি আন্দোলনের উদ্ভাবক মলয় রায়চৌধুরীর পরিচয় হয় । সে আমার কাছ থেকে একটা লেখা চায় । হাংরি জেনারেশন বুলেটিনের কথা আমি জানি, কিন্তু হাংরি আন্দোলনের যে ঠিক কী উদ্দেশ্য তা আমি জানি না । আমি তাকে আমার একটা লেখা দিই যা দেবী রায় সম্পাদিত হাংরি জেনারেশন পত্রিকায় প্রকাশিত হয় । আমি তা আমার রুমমেট শৈলেশ্বর ঘোষের কাছ থেকে পাই । সে হাংরি বুলেটিনের একটা প্যাকেট পেয়েছিল । আমি এই ধরণের আন্দোলনের সঙ্গে কখনও জড়াতে চাইনি, যা আমার মতে খারাপ । আমি ভাবতে পারি না যে এরকম একটা পত্রিকায় আমার আর্টিকেল "হাঁসেদের প্রতি" প্রকাশিত হবে ।
আমি হাংরি আন্দোলনের আদর্শে বিশ্বাস করি না, আর এই লেখাটা প্রকাশ হবার পর আমি ওদের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করেছি ।
                                                         স্বাক্ষর : সুভাষচন্দ্র ঘোষ
                                                        ২ সেপ্টেম্বর ১৯৬৪

                             
                                      সুভাষ ঘোষ Subhash Ghose

( হাংরি জেনারেশন মোকদ্দমায় সুভাষ ঘোষ রাজসাক্ষী হয়েছিলেন এবং মলয় রায়চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন । )

অ্যালেন গিন্সবার্গকে হাংরি আন্দোলনের বিরুদ্ধে লেখা আবু সঈদ আইয়ুব-এর চিঠি

পার্ল রোড, কলকাতা, 
৩১ অক্টোবর ১৯৬৪
প্রিয় শ্রীগিন্সবার্গ
          আপনার ১৩ তারিখের উদ্দেশ্যহীন অবমাননাকর চিঠি পেয়ে আমি বিস্মিত । আপনি যে কংগ্রেস ফর কালচারাল ফ্রিডমকে কমিউনিস্টদের দ্বারা চিহ্ণিত একটি জোচ্চোর বুলশিট উদারনৈতিক আঁতেলদে কমিউনিস্টবিরোধী সিনডিকেট বলে মনে করেন, তাতে আমি অবাক হইনি ; কেননা আমি কখনও কংগ্রেস ফর কালচারাল ফ্রিডামকে আপনার লেবেল 'বুর্জোয়া' কিংবা 'শ্রদ্ধেয়' থেকে মুক্ত করার কথা ভাবিনি ।
          যদি কোনো পরিচিত ভারতীয় সাহিত্যিক বা বুদ্ধিজীবি তাদের সাহিত্যিক বা বৌদ্ধিক কাজের জন্য পুলিশের অবদমনের শিকার হতো , আমি নিশ্চিত যে ভারতীয় কংগ্রেস ফর কালচারাল ফ্রিডাম আপনার অপমানজনক ওসকানি ছাড়াই হস্তক্ষেপ করতো ।  আমি আপনাকে জানিয়ে আনন্দিত যে তেমন কোনো কিছুই সাম্প্রতিককালে এদেশে ঘটেনি । মলয় রায়চৌধুরী ও তাঁর হাংরি জেনারেশনের তরুণ বন্ধুরা, আমার জ্ঞানমতে তেমন কোনো রচনা লিখে উঠতে পারেনি, যদিও তারা আত্মপ্রচার করে লিফলেট ছাপিয়ে বিলি করেছে  এবং গণ্যমান্য লোকেদের চিঠি নোংরা ও অশ্লীল ভাষায় প্রকাশ করেছে ( আমি আশা করি আপনি স্বীকার করবেন যে 'ফাক' শব্দটি অশ্লীল এবং 'বাস্টার্ড' শব্দটি নোংরা, অন্তত এই বাক্যটিতে, "গাঙশালিক স্কুলের জারজদের ধর্ষণ করো", তারা এর চেয়েও খারাপ   ভাষায় কবিদের নাম উল্লেখ করে লিখতে ইতস্তত করেনি )। সম্প্রতি তারা একজন মহিলাকে ভাড়া করে তার উন্মুক্ত বুক দেখাবার প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিল এবং সেই আশ্চর্যজনক আভাঁগার্দ প্রদর্শনী দেখার জন্য অনেকের সঙ্গে আমাকেও আহ্বান করেছিল । আপনি পৃথিবীর ওই পারে বসে কলকাতায় এই ধরণের বয়ঃসন্ধিকালীন ইয়ার্কিকে প্রচার করায় আপনার সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা বলে চালাতে পারেন । আশা করি আমার যা দায়িত্ব তা পালন করার জন্য আপনি আমাকে আপনার মতের সঙ্গে পার্থক্য সমর্থন করবেন ।
          পুলিশের পক্ষে নিশ্চয়ই বোকামি হয়েছে এই যুবকদের গড়া ফাঁদে পড়ে তাদের কয়েকজনকে কয়েক দিনের জন্য হেফাজতে নেয়া ( তাদের সবাইকে এখন ছেড়ে দেয়া হয়েছে ) আর তার দ্বারা তাদের প্রচারে সুবিধা করে দেয়া এবং জনসাধারণের সহানুভূতি সংগ্রহ করা -- তারা তাদের ইয়ার্কির মাধ্যমে নিজেদের প্রচারই চাইছিল । 
          আপনার মতের সঙ্গে আমার এ-ব্যাপারে মিল নেই যে ইনডিয়ান কমিটি ফর কালচারাল ফ্রিডামের প্রধান কাজ হলো মার্কিন বিটনিক কবিদের কাঁচা অনুকরণকারীদের সাহায্য করা । ইউরোপীয় সাহিত্য সম্পর্কে আপনার জ্ঞানকে আমি শ্রদ্ধা করি কিন্তু আমার ভাষার সাহিত্যকদের মূল্যায়ন করার ক্ষমতাকে আপনার নির্দেশে খর্ব করতে পারি না -- যে ভাষা সম্পর্কে আপনি নিজের অজ্ঞতা বেছে নিয়েছেন ।
          আপনার সঙ্গে গূঢ় পার্থক্য সত্ত্বেও এবং আপনার কয়েকটি অসাধারণ কবিতাকে ভালোলাগা সত্ত্বেও আপনাকে শুভেচ্ছা জানাই ।
                                                                    ভবদীয়
                                                               আবু সয়ীদ আইয়ুব 

( অ্যালেন গিন্সবার্গ জানতেন না যে কলকাতা পুলিশে যাঁরা হাংরিদের বিরুদ্ধে নালিশ করেছেন তাঁদের মধ্যে শ্রী আইয়ুব অন্যতম । আইয়ুব তাঁর চিঠিতে গিন্সবার্গকে জানাচ্ছেন যে পুলিশ সবাইকে ছেড়ে দিয়েছে -- এটি ভুল তথ্য । মে ১৯৬৫ সালে পুলিশ সবাইকে রেহাই দিয়ে মলয় রায়চৌধুরীর "প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক ছুতার" কবিতাটির জন্য অশ্লীলতার মামলা দায়ের করেছিল । নিম্ন আদালতে মলয় রায়চৌধুরীর একমাসের কারা দণ্ডাদেশ হয়েছিল, ফেব্রুয়ারি ১৯৬৬ সালে । কলকাতা হাইকোর্টে মলয় মামলা জিতে যান জুলাই ১৯৬৭ সালে । অর্থাৎ মামলাটির জন্য মলয় রায়চৌধুরীকে ৩৫ মাস আদালতে দৌড়াদৌড়ি করতে হয়েছিল । )

মলয় রায়চৌধুরীর মামলায় সবচেয়ে ঘৃণ্য ও ক্ষমার অযোগ্য আচরণ করেছিলেন শৈলেশ্বর ঘোষ ও সুভাষ ঘোষ, হাংরি জেনারেশন আন্দোলনের বিরুদ্ধে মুচলেকা দিয়ে এবং আদালতে মলয় রায়চৌধুরীর বিরুদ্ধে রাজসাক্ষী হয়ে । মলয় রায়চৌধুরীর বিরুদ্ধে এই মামলায় পুলিশের পক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন শক্তি চট্টোপাধ্যায়, উৎপলকুমার বসু এবং সন্দীপন চট্টোপাধ্যায় ।
         

মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

শৈলেশ্বর ঘোষ, তাঁর কুখ্যাত মুচলেকা

আমার নাম শৈলেশ্বর ঘোষ । আমার জন্ম বগুড়ায় আর বড়ো হয়েছি বালুরঘাটে। আমি ১৯৫৩ সনে বালুরঘাট হাই ইংলিশ স্কুল থেকে স্কুল ফাইনাল পাশ করেছি, ১৯৫৫ সনে বালুরঘাট কলেজ থেকে বিএ, আর ১৯৬২ সনে কলকাতার সিটি কলেজ থেকে বাংলায় স্পেশাল অনার্স । ১৯৬৩ সনে সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিকে একদিন কলেজ স্ট্রিট কফিহাউসে দেবী রায় ওরফে হারাধন ধাড়া নামে একজন তাঁর হাংরি জেনারেশন ম্যাগাজিনের জন্য আমাকে লিখতে বলেন । তারপরেই আমি হাংরি আন্দোনের লেখকদের সঙ্গে পরিচিত হই । আমি ব্যক্তিগতভাবে খ্যাতিমান লেখক সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়, শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, রবীন্দ্র দত্ত, বাসুদেব দাশগুপ্ত, প্রদীপ চৌধুরী এবং উৎপলকুমার বসুকে চিনি । গত এপ্রিল মাসে একদিন কলেজ স্ট্রিট কফিহাউসে মলয় রায়চৌধুরীর সঙ্গে আমার দেখা হয়, এবং তিনি আমার কাছ থেকে কয়েকটা কবিতা চান । তাঁর কাছ থেকে আমি জানতে পারি যে, হাংরি বুলেটিনের একটা সংখ্যা খুব শীঘ্র প্রকাশিত হবে । মাসখানেক আগে আমি তাঁর কাছ থেকে একটা পার্সেল পেয়েছি । আমি মলয় রায়চৌধুরীকে চিনি । তিনি হাংরি আন্দোলনের স্রষ্টা । হাংরি জেনারেশন ম্যাগাজিনে আমি মোটে দু'বার কবিতা লিখেছি । মলয় আমাকে কিছু লিফলেট আর দু'তিনটি পত্রিকা পাঠিয়েছিলেন কিন্তু সেগুলি সম্পর্কে কোনো নির্দেশ তিনি আমাকে দেননি । সাধারণত এইসব কাগজপত্র আমার ঘরেই থাকত । এটুকু ছাড়া হাংরি আন্দোলন সম্পর্কে আমি আর কুছু জানি না । অশ্লীল ভাষায় লেখা আমার আদর্শ নয় । ১৯৬২ থেকে আমি হুগলি জেলার ভদ্রকালীতে ভূপেন্দ্র স্মৃতি বিদ্যালয়ে স্কুল টিচার । মাইনে পাই দুশো দশ টাকা । বর্তমান সংখ্যা হাংরি বুলেটিনের প্রকাশের পর, যা কিনা আমার অজান্তে ও বিনা অনুমতিতে ছাপা হয়, আমি এই সংস্হার সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করেছি । ভবিষ্যতে আমি হাংরি আন্দোলনের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখব না, এবং হাংরি পত্রিকায় লিখব না । বর্তমান বুলেটিনটি ছাপিয়েছেন প্রদীপ চৌধুরী ।
                                                                 স্বাক্ষর : শৈলেশ্বর ঘোষ
                                                                 ২ সেপ্টেম্বর ১৯৬৪

( শৈলেশ্বর ঘোষ হাংরি মামলায় মলয় রায়চৌধুরীর বিরুদ্ধে রাজসাক্ষী হয়েছিলেন, এবং আদালতের ট্রেজারি থেকে রাজসাক্ষীর প্রাপ্য টাকাও নিয়েছিলেন । নিজের স্খলনকে লুকোবার উদ্দেশে তিনি অবিরাম মলয় রায়চৌধুরী এবং সমীর রায়চৌধুরীর বিরুদ্ধে লিখে গেছেন । নিজের পরিবারের সদস্যদেরও মলয় রায়চৌধুরী-বিরোধী তৈরি করে গেছেন । পরবর্তীকালে 'দে'জ থেকে যে হাংরি সংকলন প্রকাশিত হয়েছে, তাতে এমন বহু ভুয়ো লেখকের রচনা আছে যারা হাংরি আন্দোলনের সময়ে জন্মায়নি । )